রমজানের ইফতারে স্বাস্থ্যকর ও আধুনিক ট্রেন্ড মেনে চলতে চাইলে এই রেসিপি এবং টিপসগুলি আপনার জন্য! ২০২৫ সালের ট্রেন্ড অনুযায়ী এখানে থাকছে পুষ্টিকর, এবং দ্রুত তৈরির ইফতার রেসিপি ২০২৫ আইডিয়া।
আলুর চপ
- আলু ৫০০ গ্রাম,
- ডিম ১টি সিদ্ধ করে ভর্তা করতে হবে,
- কাঁচামরিচ কুচি ১ চা চামচ,
- ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ,
- পেয়াজ বেরেস্তা করা ২ টেবিল চামচ,
- গরম মশলা গুঁড়ো ১ চা চামচ,
- ডিম ১টি ফেটানো,
- বিস্কুটের গুঁড়ো পরিমাণমতো,
- তেল ভাজার জন্য পরিমাণমতো,
- লবণ স্বাদ অনুযায়ী।
প্রথমে আলু সিদ্ধ করে লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ মেখে রাখতে হবে। একটি কড়াইয়ে তেল গরম করে একে একে তাতে আলু ভর্তা, ডিমের ভর্তা, কাঁচামরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি, গরম মশলা গুড়ো, স্বাদ অনুযায়ী লবণ এবং পেয়াজ বেরেস্তা দিয়ে ভালোভাবে ভাজা ভাজা করে আবার মেখে নিতে হবে।
হাল্কা হাতে চ্যাপটা আকারের চপগুলো প্রায় ১০-১২টি করে ফ্রিজে প্রায় ৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর ডিমের গোলায় ডুবিয়ে বিস্কুটের গুঁড়ো মিশিয়ে গরম ডুবন্ত তেলে ভেজে টিস্যু পেপারে তুলে রাখতে হবে।
ব্যাস তৈরি হয়ে গেল মজাদার আলুর চপ। ব্যাস! আমরা শিখে ফেললাম সুন্দর একটি ঝটপট ইফতার রেসিপি।
চিড়ার চপ
- চিড়া – ১কাপ,
- পিয়াজ কুচি – ১/২ কাপ,
- কাচা মরিচ কুচি – পছন্দ মতন,
- গোল মরিচ গুড়া – পছন্দ মতন,
- লবণ – স্বাদ মতন,
- চালের গুড়া – ১ টেবিল চামচ (মচমচে করার জন্য, যদি আপনি চান),
- ডিম – ১ টা,
- ধনে পাতা কুচি – প্রয়োজনমত,
- তেল – চপ ভাজার জন্য পরিমাণমত।
চিড়া ভাল করে ধুয়ে, পানিতে ৫ মিনিটের মতন ভিজিয়ে রাখতে হবে। ৫ মিনিট পর ভাল করে পানি ঝরিয়ে চিড়াগুলিকে একটি বাটিতে নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে চিড়াতে যেন পানি না থাকে।
এরপর এক এক করে সব উপকরণ মিশাতে হবে। এইবার এই মিশ্রণ দিয়ে ছোট ছোট বল বানিয়ে, চপ এর মতন সাইজ করে একটা প্লেটে রাখতে হবে। এখন ফ্রাই প্যানে অল্প তেল দিয়ে চপগুলি ভাজতে হবে। যখন চপ গুলি বাদামি রঙ হবে তখন প্লেটে তুলে রাখুন। তৈরি হয়ে গেল মজাদার চিড়ার চপ!
পিঁয়াজু
- মসুর ডাল – ১ কাপ,
- পেঁয়াজ কুচি- ২ টা মাঝারি আকারের,
- কাঁচামরিচ কুচি – ৬-৭ টা বা স্বাদমত,
- চালের গুঁড়া – ১ ও ১/২ টেবিল চামচ,
- জিরা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ,
- হলুদ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ,
- আদা বাটা – ১/২ চা চামচ,
- রসুন বাটা – ১/২ চা চামচ,
- ধনিয়া পাতা কুচি – ২ টেবিল চামচ,
- লবণ – ৩/৪ চা চামচ বা স্বাদমত,
- তেল – ডুবো তেলে ভাজার জন্য যতটুকু লাগে।
প্রথমে মসুর ডাল ভাল করে ধুয়ে ২-৩ ঘণ্টা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আগের রাতে ভিজিয়ে রাখেন, পুরো রাত্রি ভিজিয়ে রাখেন। তারপর পানি ফেলে দিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন।
খুব মিহি করে ব্লেন্ড করার দরকার নেই। একটু দানাদার থাকতে নিয়ে নিন। আর পারলে ব্লেন্ডারের জায়গায় শিল-পাটা দিয়েও ডাল বাটতে পারেন। ব্লেন্ড করা বা বাটা ডাল একটি বাটিতে নিয়ে তেল ছাড়া সব উপকরণ দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
এবার প্যানে তেল গরম করে ১ টেবিল চামচ মত ডালের মিশ্রণ নিয়ে গোল করে তেলে ছাড়ুন। প্যানে জায়গা অনুযায়ী আরও পিঁয়াজু তেলে দিন এবং মাঝারি আঁচে উভয় পাশ হাল্কা বাদামী করে ভেজে নিন।
ভাজা হয়ে গেলে কিচেন টিস্যুতে তুলে নিন। এভাবে সব পিঁয়াজু ভেজে গরম গরম পরিবেশন করুন আপনার ইফতারির টেবিলে।
বেগুনি
- ছোলার ডালের বেসন দেড় কাপ,
- চালের গুঁড়া আধা কাপ,
- লম্বা বেগুন ১-২টি,
- মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ,
- হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ,
- বেকিং পাউডার এক চা-চামচ,
- পেঁয়াজ বাটা এক চা-চামচ,
- রসুন বাটা এক চা-চামচ,
- আদা বাটা এক চা-চামচ,
- লবণ পরিমাণমত,
- তেল (ভাজার জন্য) পরিমাণমত।
বেগুন ও তেল বাদে বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে পানি দিয়ে মিশিয়ে থকথকে গোলার মত করে ফেলুন। এরপর কিছু সময় ঢেকে রাখুন। বেগুন পাতলা টুকরা করে কেটে সামান্য লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রাখুন।
এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে বেগুন বেসনের গোলায় ডুবিয়ে ডুবো তেলে ভাজতে শুরু করুন আস্তে আস্তে। খেয়াল রাখবেন যেন মচমচে বাদামি রঙ করে ভাজা হয়। এরপর তেল থেকে উঠিয়ে কিচেন টাওয়েল অথবা কাগজের ওপর রাখতে হবে যাতে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। তৈরি হয়ে গেল গরমাগরম মজাদার বেগুনি!
ছোলা বুট
- ১ কাপ ছোলা,
- ১/৪ কাপ পেঁয়াজ কুচি,
- ২ টি টমেটো কিউব করে কাটা,
- ২ টি কাঁচামরিচ কুচি,
- ৩ টেবিল চামচ তেল,
- ২ চা চামচ ধনে গুঁড়ো,
- ১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো,
- আধা চা চামচ মরিচ গুঁড়ো,
- আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়ো,
- দেড় চা চামচ লেবুর রস,
- ১ চা চামচ আদা-রসুন বাটা,
- আধা চা চামচ গরম মসলা গুঁড়ো,
- লবণ স্বাদমতো,
- ১ চিমটি বিট লবণ,
- ধনে পাতা কুচি ইচ্ছে।
প্রথমে ছোলা বুট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। এরপর সামান্য লবণ ও হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ছোলা বুট সেদ্ধ করে নিন । চুলায় প্যানে তেল দিয়ে গরম করে আদা-রসুন বাটা দিন । একটু লালচে হয়ে এলে এতে পেঁয়াজ কুচি দিন।
পেঁয়াজ কুচি নরম হয়ে এলে বাকি সকল মসলা একের পর একে প্যানে দিয়ে সামান্য পানি দিয়ে মসলা কষাতে থাকুন। মসলা কষে আসার পর টমেটো কুচি দিয়ে ভালো করে নেড়ে ছোলা বুট ঢেলে দিন। ভালোমতো নাড়াতে থাকুন মসলা মাখা মাখা হয়ে যাওয়া পর্যন্ত।
এরপর লেবুর রস দিয়ে ভালো করে নেড়ে উপরে ধনে পাতা কুচি ছিটিয়ে নামিয়ে নিন। ব্যাস, তৈরি হয়ে গেলো মজাদার ছোলা বুট।
পুঁইপাতা ফ্রাই
- পুঁইশাকের বড় বড় পাতা,
- বেসন ১ কাপ,
- হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ,
- মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ,
- লবণ স্বাদ অনুযায়ী,
- রসুন বাটা আধা চামচ,
- বেকিং পাউডার সামান্য,
- বিট লবণ আধা চা-চামচ,
- পানি পরিমাণমত,
- তেল পরিমাণমত ভাজার জন্য।
বিট লবণ ও তেল বাদে বেসনে বাকি সব মসলা একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন পরিমাণ মতো পানি দিয়ে। কড়াইয়ে তেল গরম করে পুঁইশাকের পাতা এক একটি করে বেসনে মিশ্রণে ডুবিয়ে ডুবো তেলে মচমচে ভেজে টিস্যু কাপড়ে তুলে রেখে নিজের পছন্দ অনুযায়ী সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
কুমড়ো পাতার বড়া
- কুমড়ো পাতা কুচি ১ কাপ,
- চালের গুড়ো ১/২ কাপ,
- ধনে পাতা কুচি ২ টেবিল চামচ,
- পেয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ,
- রসুন বাটা ১ চা চামচ,
- আদার রস ১ চা চামচ,
- মরিচ গুড়ো ১ চা চামচ,
- হলুদ গুড়ো ১ চা চামচ,
- ধনিয়া গুড়ো ১/২ চা চামচ,
- জিড়া গুড়ো ১/২ চা চামচ,
- লবন স্বাদ মত,
- তেল পরিমান মত।
তেল বাদে বাকি সব একসাথে ভাল করে মাখিয়ে নিন। প্রয়োজন হলে সামান্য ১-২ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে নিন ।হাতের তালুতে নিয়ে গোল গোল সেপ করে নিন।
প্যান এ তেল দিয় ভাল করে গরম হলে আচ কমিয়ে দিন। বড়া দিয়ে ডিপ ফ্রাই করে নিন। টমাটো সস দিয়ে বিকালের নাস্তায় অথবা গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।
ছোলার ফ্রুটি চাট
- ছোলা দুই কাপ (সিদ্ধ),
- কাবলি বুট দেড় কাপ (সিদ্ধ),
- আপেল একটি,
- পাকা আম একটি,
- পেয়ারা একটি,
- বেদানা দেড় কাপ দানা,
- শসা একটি,
- আনারস একটি,
- আঙ্গুর ১৫ থেকে ২০টি,
- মালটা একটি,
- ক্যাপসিকাম একটি,
- ভুট্টার দানা দেড় কাপ,
- লেটুস পাতা চার থেকে পাঁচটি,
- গাজর মাঝারি সাইজের দুই থেকে তিনটি,
- চিকন চানাচুর এক কাপ,
- লেবুর রাস ও লেবুর খোসা এক চামচ,
- টক দই দুই কাপ (ঘন),
- চাট মসলা ১/২ টেবিল চামচ, বিট লবণ স্বাদমত,
- কাচা মরিচ চার থেকে পাঁচটি (কুচি করে নেওয়া), গোল মরিচ কুচি ১/৩ চা চামচ,
- পুদিনা পাতা তিন থেকে চারটি, আদা কুচি এক চামচ।
প্রথমে একটি বড় পাত্র নিয়ে তাতে একে একে সিদ্ধ করা ছোলা, কাবলি বুট মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে একে একে সব ফল ও সবজি মিশিয়ে নিতে হবে। আম সব শেষে মেশাতে হবে।
সব ফল মেশানো হয়ে গেলে একে একে মরিচ কুচি, আদা কুচি, চাট মশলা, লেবুর খোসা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর টক দই মিশিয়ে নিন। পুদিনা পাতা, গোল মরিচ কুচি, লবণ দিতে হবে।
সাথে চিকন চানাচুর দিয়ে তার উপরে লেবুর রস ছিটিয়ে দিয়ে ভাল করে মাখিয়ে নিতে হবে সবকিছু একবার। মাখানোর পরপর ইফতারে পরিবেশন করুন ঝটপট মজাদার এই ফলাহারটি।
আরও মুখরোচক ও স্বাস্থ্যকর করার জন্য যোগ করতে পারেন মুরগির মাংসের টুকরা। রোজার মধ্যে এই ফলাহার একদিকে যেমন সহজে তৈরি করা সম্ভব আবার তেমনই শরীরের জন্য খুব উপকারী। এতে তেল ও মশলার অতিরিক্ত ব্যবহার নেই ফলে সারাদিন অভুক্ত থেকে খাবার পরে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবেনা।
প্রণ বল
- পাউরুটি – ৬/৭ স্লাইস,
- ডিম – ১ টি,
- চিংড়ি – ২৫০ গ্রাম,
- ধনেপাতা কুচি – পরিমাণ মত,
- পিঁয়াজ কুচি – ১/৪ কাপ,
- কাঁচামরিচ কুচি – ১ টেবিল চামচ,
- আদা বাটা – ১/২ চা চামচ,
- রসুন বাটা – ১/২ চা চামচ,
- লবণ – পরিমাণ মত,
- ধনে গুঁড়া – ১/২ চা চামচ,
- জিরা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ,
- তেল – পরিমাণ মত।
প্রথমে পাউরুটির টুকরোগুলোকে ছোট ছোট কিউব করে কাটতে হবে। এরপর একটি পাত্রে একে একে পিঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, লবণ, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া দিয়ে, একসাথে সব মেখে নিতে হবে ভালো করে।
এরপর ডিম এবং খোসা ছাড়ানো চিংড়িগুলোকে মিশ্রণের সাথে যোগ করতে হবে। কিছুক্ষণ (১৫ মিনিট) ঢেকে রেখে দিতে হবে। এরপর কিউব করে কাটা কিছু পাউরুটি হাতে নিয়ে এর ওপর কিছুটা মিশ্রণ নিয়ে এর ওপর আবার কিছু পাউরুটির টুকরো দিয়ে বলের আকার দিতে হবে।
পাউরুটিগুলোকে ভালো করে চেপে চেপে গোল করতে হবে, নাহলে তেলে ছাড়লে ছড়িয়ে যাবে। এরপর তেল গরম করে হালকা আঁচে বলগুলি ভাজতে হবে। জ্বালের ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে যেন তেল খুব বেশি গরম না হয়ে যায়। নয়ত ভেতরের চিংড়ি সিদ্ধ হবে না। লাল লাল রঙের হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলতে হবে।
ব্যাস তৈরি হয়ে গেল প্রণ বল। টমেটো সস বা হোয়াইট সসের সাথে গরম গরম পরিবেশন করুন।
ধনে পাতার বড়া
- ধনেপাতা পাতা – ১ আঁটি,
- বেসন – ১ কাপ,
- কর্ণফ্লাওয়ার – ১/২ কাপ,
- আদা বাটা – ১/২ চা চামচ,
- রসুন বাটা – ১/২ চা চামচ,
- লবণ – পরিমাণ মত,
- মরিচ গুঁড়া – ১ টেবিল চামচ,
- ধনে গুঁড়া – ১/২ চা চামচ,
- জিরা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ,
- গোলমরিচ গুঁড়া – সামান্য,
- জাফরান রং – এক চিমটি,
- তেল – পরিমাণ মত,
- পানি – পরিমাণ মত।
প্রথমে একটি পাত্রে বেসন, কর্ণফ্লাওয়ার, আদা বাটা, রসুন বাটা, লবণ, মরিচ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, গোলমরিচ গুঁড়া, জাফরান রং সব একসাথে নিতে হবে। এরপর পরিমাণমত পানি মিশিয়ে একটি ঘন গোলা বানাতে হবে।
ধনেপাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে (গোড়ার দিকটা কেটে ফেলতে হবে) পানি শুকিয়ে নিতে হবে। পাত্রে তেল দিয়ে গরম করে নিতে হবে। এরপর একটি ধনে পাতার ডাল নিয়ে গোলায় চুবিয়ে তেলে ছাড়তে হবে।
গাঢ় বাদামী রং হয়ে এলে নামিয়ে ফেলতে হবে। এভাবে বাকি ধনেপাতাগুলোও ভেজে ফেলতে হবে। গরম গরম মুচমুচে ধনেপাতার বড়া পরিবেশন করুন ইফতারের টেবিলে।
চিকেন কাটলেট
- মুরগীর বুকের মাংস – ১/২ কেজি,
- ব্রেড ক্রাম্ব – পরিমাণ মত,
- টক দই – হাফ কাপ,
- টমেটো সস – ২ টেবিল চামচ,
- সয়া সস – ২ টেবিল চামচ,
- চিলি সস – ২ টেবিল চামচ,
- আদা বাটা – ১ চা চামচ,
- রসুন বাটা – ১ চা চামচ,
- লবণ – পরিমাণ মত,
- মরিচ গুঁড়া – ২ টেবিল চামচ,
- ধনে গুঁড়া – ১ চা চামচ,
- জিরা গুঁড়া – ১ চা চামচ,
- গোলমরিচ গুঁড়া – ১ চা চামচ,
- গরম মশলা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ,
- ডিম – ১ টা,
- তেল – পরিমাণ মত।
প্রথমে বুকের মাংস পাতলা স্লাইস করে কেটে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর এর মধ্যে টক দই, টমেটো সস, সয়া সস, চিলি সস, আদা বাটা, রসুন বাটা, লবণ, মরিচ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, গোলমরিচ গুঁড়া এবং গরম মশলা গুঁড়া একে একে দিয়ে দিতে হবে।
সব উপকরণ দিয়ে মুরগীটা ভালো করে মেরিনেট করে ১ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। এরপর একটি পাত্রে ডিম ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে এবং অপর পাত্রে ব্রেডক্রাম্ব নিতে হবে। মুরগীর টুকরোগুলো ডিমে চুবিয়ে, ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে নিতে হবে।
একটি পাত্রে তেল দিয়ে, গরম হলে তাতে টুকরোগুলো ছেড়ে দিতে হবে, লাল রং ধারণ করলে নামিয়ে নিতে হবে। হয়ে গেল চিকেন কাটলেট।
সুজির বড়া
- সুজি – ২৫০ গ্রাম,
- ডিম – ১টা,
- চিনি – পরিমাণ মত।
সবগুলো উপকরণ একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে চিনিটা যেন সম্পূর্ণ গলে যায়। এরপর ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে অল্প আঁচে রাখতে হবে।
সুজির মিশ্রণ থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে বড়ার আকারে তেলে ছাড়তে হবে। প্রথমে অনেকটা নরম থাকবে, পুরোপুরি ভাজা হয়ে গেলে শক্ত হয়ে যাবে। মজাদার সুজির বড়া তৈরি। বক্সে করে রেখে দুই তিন দিন খেতে পারবেন।
টক দইয়ের শরবত
- টক দই – ১ কাপ,
- গুঁড়া দুধ – ৩ টেবিল চামচ,
- লবণ – ১/২ চা চামচ,
- চিনি – ১/২ কাপ,
- পানি – পরিমাণ মত,
- কিছু বরফের টুকরো।
সবগুলো উপকরণ একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ঠান্ডা ঠান্ডা এক গ্লাস শরবত আপনার সারদিনের রোজা শেষে, ক্লান্তিকে মুহূর্তেই দূর করে দিবে।
সবজি চপ
- গাজর ১০০ গ্রাম,
- বরবটি ১০০ গ্রাম,
- আলু ৫০ গ্রাম,
- কাচা কলা ১০০ গ্রাম,
- বেসন ৫০ গ্রাম,
- তেল ২০০ গ্রাম,
- কর্নফ্লাওয়ার ২০ গ্রাম,
- লবণ পরিমাণ মত,
- ডিম ৩টা,
- বিস্কুটের গুঁড়ো ১০০ গ্রাম।
একটি বাটিতে গাজর, বরবটি, লালশাক, পুই শাক, আলু কাটা কলা সেদ্ধ একত্রে চটকে নিন। চটকানো সবজির সাথে বেসন কর্নফ্লাওয়ার লবণ দিয়ে মাখিয়ে চপের মত করে শেপ করে নিন।
ডিম ফেটে চপ ডিমে ডুবিয়ে বিস্কুটের গুঁড়োতে গড়িয়ে বাদামি করে এপিঠ ওপিঠ ভেজে তুলুন। সুন্দর করে গাজরে ফুল দিয়ে সাজিয়ে, টমেটো সসের সাথে ইফতারির টেবিলে গরম গরম পরিবেশন করুন।
সবজি পেঁয়াজু
- মসুর ডাল আধা কাপ,
- মটর ডাল আধা কাপ,
- পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ,
- গাজর কুচি সিকি ১ কাপ,
- বাঁধাকপি কুচি আধা কাপ,
- মটরশুঁটি কুচি সিকি ১ কাপ,
- আলু কুচি সিকি কাপ,
- ধনেপাতা কুচি সিকি কাপ,
- কাঁচা মরিচ কুচি ২ টেবিল-চামচ,
- লবণ পরিমাণমতো,
- বেসন ২ টেবিল-চামচ,
- পুঁইপাতা কুচি আধা কাপ।
ডাল ধুয়ে ৩-৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে বেটে নিতে হবে। সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে ডুবোতেলে ভাজতে হবে। তারপর গরম গরম পেঁয়াজু খাবার টেবিলে পরিবেশন করুন।
শাহী হালিম
- খাসি বা গরুর গোসত হাড় সহ- (৫০০গ্রাম ),
- রাঁধুনি হালিম মিক্স বা হাতের বানানো হালিম – ১ প্যাক,
- ধনিয়াপাতা কুচি – ১ কাপ,
- আদা কুচি – ১ চা চামচ,
- পেয়াজ বেরেস্তা – ১ কাপ,
- আদা বাটা – ২ চা চামচ,
- রসুন বাটা – ১ চা চামচ,
- টালা জিরা গুড়ো – ১ চা চামচ,
- লবণ – স্বাদ মতন,
- সয়াবিন তেল – ১ কাপ,
- তেয়াজ পাতা – ২ টি,
- এলাচ – ২ টি,
- দারুচিনি – ২ খন্ড,
- মরিচ কুচি – ২ টেবিল চামচ,
- শসা, লেবু, টমেটো – ডেকোরেশনের জন্য।
শাহী হালিম তৈরি করতে প্রথমে ফুটন্ত গরম পানিতে হালিম মিক্স বা হাতে বানানো ডালের গুড়ো ভিজিয়ে রাখুন এক ঘন্টা। মাংস গুলো একটু বড় করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। এই বার কড়াই তে মাংস গুলো মসলা দিয়ে ভাল ভাবে কশিয়ে নিতে হবে।
যখন মাংস গুলো হাফ সিদ্ধ হবে তখন এই পাত্রে ভিজিয়ে রাখা ডাল বা হালিম মিক্স ঢেলে দিন। অনবরত নাড়তে হবে না হয় নিচে লেগে যাবে। একটা সময় যখন ঘন হয়ে আসবে তখন নামিয়ে উপরে পেয়াজ বেরেস্তা দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল আমাদের শাহী হালিম মিক্স।
যদি দোকানের কেনা হালিম প্যাক না ব্যবহার করতে চান তাহলে নিজ হাতে তৈরি করুন শাহী হালিম। হাতে বানানো শাহী হালিম দুই ভাবে তৈরি করা যায়। দেখুন কিভাবে তৈরি করতে হয় হাতের বানানো শাহী হালিম।
যে ভাবে হাতে তৈরি করবেন শাহী হালিম মিক্স:
- ছোলার ডাল – ১০০ গ্রাম
- মুশুর ডাল – ১ কাপ
- মুগের ডাল – ১/২ কাপ
- মাসকলাই ডাল – ১ কাপ
- খেসারি ডাল – ১ কাপ
- বুটের ডাল – ১ কাপ
- কালিজিরা চাউল – ১ কাপ
সব ডাল গুলো হালকা ভেজে মেশিন বা ব্লেন্ডারে এমন ভাবে গুড়ো করতে হবে যেন সামান্য আস্ত আস্ত থাকে। শুখনো কোন বক্সে রেখে সংরক্ষণ করুণ। এই ভাবে বানানো হলে সংরক্ষণ করে রেখে রান্না করা যায়।
অন্যথায় যে ভাবে হাতে শাহী হালিম মিক্স তৈরি করবেন।
উপরের সব উপকরণ গুলো এক সাথে মিশিয়ে নরমাল পানি দিয়ে ৫/৬ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ডাল ভাল ভাবে ধুয়ে সামান্য পানি দিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে। এবং এই পদ্ধতি তে সংরক্ষণ করা যায় না। সাথে সাথে রান্না করে খেতে হয়।
ঘরে যে ভাবে শাহী হালিম মসলা তৈরি করে:
- আস্ত জিরা- ৩ চা চামচ
- জয় ফল – ২ টা
- জয়ত্রী – ৫ গ্রাম
- শুঁখনো মরিচ – ৩ টা
- এলাচ – ৪ টা
- দারুচিনি – ২ খন্ড
- মৌরি – ১ চা চামচ
- শাহী জিরা – ১ চা চামচ
- তেয়াজপাতা – ৩ টি
- আস্ত ধনিয়া – ১ চা চামচ
- গোলমরিচ – ১ চা চামচ
- স্টার এনাইজ – ২ টি
- সাদা গোলমরিচ – ১ চা চামচ
- আস্ত লঙ – কয়েকটি
সব গুলো উপকরণ আস্ত বা কাচা হতে হবে। মসলা এক এক করে ভেজে সব উপকরণ মিক্স করে ব্লেন্ড করতে হবে। হয়ে গেল আমাদের শাহী হালিম এর জন্য গরম মসলা। বাহিরের মসলা শাহী হালিমে ব্যবহার না করতে চাইলে নিজ হাতেই তৈরি করে ফেলুন গরম মসলা।
ছোলা পোলাও
- বাসমতি চাল ২ কাপ,
- সয়াবিন তেল ১/৪ কাপ,
- সেদ্ধ ছোলা ৩/৪ কাপ,
- পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ,
- কাঁচা মরিচ ২ টি,
- লবঙ্গ ২-৩ টি,
- দারুচিনি ২-৩ টুকরো,
- রসুন বাটা ২ চা চামচ,
- আদা বাটা ১ চা চামচ,
- জিরা বাটা ১ চা চামচ,
- ৩-৪ কাপ গরম পানি,
- চিনি ১ চা চামচ,
- লবন ২ চা চামচ/ স্বাদমতো
- বেরেস্তা ২ টেবিলচামচ।
চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। পেঁয়াজ কুচি তেলে ভেজে বেরেস্তা করে রাখুন। একটি পাত্রে তেল দিয়ে পেঁয়াজ হালকা বাদামি করে ভেজে নিন।
এতে কাঁচা মরিচ, লবঙ্গ, দারচিনি, রসুন বাটা, আদা বাটা, জিরা বাটা দিয়ে ২-৩ মিনিট কষিয়ে নিন। এরপর ছোলা দিয়ে আরও ২-৩ মিনিট ভাজতে হবে। এতে বাসমতি চাল দিন। লবন ও গরম পানি দিন।
পানি ফুটতে শুরু করলে জ্বাল কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট রেখে দিন। যদি চাল সেদ্ধ না হয় তাহলে আরও কিছুক্ষণ চুলায় রেখে দিন। পাত্রের তলায় যেন পুড়ে না যায়, এজন্য এক, দুইবার নেড়ে দিন। রান্না শেষে বেরেস্তা দিয়ে পরিবেশন করুন।
শামি কাবাব
- গরুর কিমা ১/২ কেজি,
- বুটের ডাল ১/২ কাপ,
- পেঁয়াজ ১ টি (কুচি করে কাটা),
- রসুন বাটা ১ চা চামচ,
- আদা বাটা ১ চা চামচ,
- গোল মরিচ ৮-১০ টি,
- দারুচিনি গুঁড়া ১ ১/২ চামচ,
- মরিচের গুঁড়া ১ চা চামচ,
- কাঁচা মরিচ ২ টি (কুচি করে কাটা),
- পানি ২ কাপ,
- লেবুর রস ১ টেবিলচামচ,
- ডিম ২ টি,
- সয়াবিন তেল ১ কাপ,
- লবন স্বাদমতো।
বুটের ডাল এক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। পেঁয়াজ কুচি তেলে ভেজে বেরেস্তা করে রাখুন। এবার বুটের ডাল ও মাংসের কিমা ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এতে আদা বাটা, রসুন বাটা, গোল মরিচ, দারুচিনি গুঁড়া, মরিচের গুঁড়া ও লবন দিন।
এই মিশ্রণটি প্রেসার কুকার দিয়ে সেদ্ধ করুন। তবে বাসায় ফুড প্রসেসর থাকলে প্রেসার কুকার ব্যবহার করতে হবে না। সেক্ষেত্রে একটি পাত্রে বুটের ডাল ও কিমা মিশ্রণটি ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর পানি শুকিয়ে গেলে ফুড প্রসেসরে পেষ্ট করে নিতে হবে।
প্রেসার কুকারে রান্না করলে, বুটের ডাল ও কিমা সামান্য পানি দিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিতে হবে। নামানোর পর প্রেসার কুকারে পানি থাকলে, মাঝারি আঁচে জ্বাল দিয়ে পানি শুকিয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা হলে এতে লেবুর রস, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ কুচি মিশিয়ে ভালোভাবে মেখে ছোট ছোট কাবাব তৈরি করে নিতে হবে।
একটি বাটিতে ডিম ফেটিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে তেল গরম করে নিন। প্রতিটি কাবাব ডিমে ডুবিয়ে গরম তেলে ভেজে নিন।
ছানা জিলাপি
- ছানা ২ কাপ,
- ময়দা ২ চা চামচ,
- পাউডার দুধ ১ চা চামচ,
- চিনি ১ চা চামচ (খামির জন্য),
- বেকিং পাউডার ১/৪ চা চামচ,
- ঘি ২ টেবিলচামচ,
- সয়াবিন তেল পরিমাণমতো (ভাজার জন্য),
- চিনি (সিরা বানানোর জন্য পরিমাণমতো),
- এলাচ ৩/৪ টি,
- পানি ১ কাপ।
প্রথমে ছানা খুব ভালোভাবে পিষে নিতে হবে। এতে ময়দা, গুঁড়া দুধ, বেকিং পাউডার, চিনি ১ চা চামচ ও ঘি মিশিয়ে নরম খামি তৈরি করে নিন। ছানার খামি ৮ থেকে টি ভাগ করুন। প্রতিটি ভাগ লম্বা দড়ির মতো করে নিন। তবে সতর্ক থাকতে হবে, এতে কোন ফাটল যেন না থাকে। এবার ধীরে ধীরে জিলাপির মতো পেঁচিয়ে নিন। একটি পাত্রে পেঁচানো জিলাপিগুলো আলাদা আলাদা করে রেখে দিন।
এবার একটি পাত্রে পানি, চিনি ও এলাচ একসাথে মিশিয়ে মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন। ঘন ঘন নেড়ে দিন। চিনি ভালোভাবে গলে গেলে চুলা থেকে পাত্রটি নামিয়ে ফেলুন।
এরপর একটি পাত্রে তেল গরম করুন। তেলের মধ্যে জিলাপি দিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজতে হবে। জিলাপির চারদিক যেন সমানভাবে ভাজা হয় এজন্য কিছুক্ষণ পর পর একটি চামচ দিয়ে উল্টিয়ে দিন। তবে সাবধানে নাড়তে হবে, যাতে জিলাপি ভেঙ্গে না যায়। জিলাপি বাদামি হলে নামিয়ে নিন ও চিনির সিরায় ডুবিয়ে রাখুন। ৫ মিনিট সিরায় ডুবিয়ে এবার অন্য পাত্রে জিলাপিগুলো তুলে রাখুন।
শেষ কথা: এয়ার ফ্রায়ার বা স্টিমিং ব্যবহার করে তেলের ব্যবহার কমিয়ে স্বাস্থ্যকর ইফতার তৈরি করুন! রমজানের প্রস্তুতিতে এই রেসিপি ও টিপস দিয়ে শুরু করুন, ইনশাআল্লাহ তা সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর হবে! 🌙✨